অনন্ত অঙ্গীকার

আমাকে বিকিয়ে দিয়ে ডাকো যদি ফের
সাজিয়ে বেহুলার ভাসান বিষক্রিয়া ঢের;
ভুলে গিয়ে অতীন্দ্রিয় অসুখ—
প্রাচীন অভিমানে পোষা অন্তর্গত দাগ;
ফিরব নিয়তির ফলায় দারুশিল্পের শোণিত অতীত।

যদি বাউকুড়ানির ঠোঁটে ওড়ে শিরীষের ক্লেদ;
ভোরের নদী হয় স্বাদহীন অনার্য তুহিন;
বয়োজ্যেষ্ঠ বে-আব্রু সন্ধ্যায়—
আমূল উচ্ছেদে ঘুচিয়ে পাণ্ডুলিপির দেনা
ফিরব কামাগ্নি গোলাপের মতো আদি উৎসমূলে!

পাখামেলা গাঙচিল মৃগনয়নার চোখে—
পাই যদি অন্তিম যাত্রায় কেতাদুরস্ত অবহেলা;
যদি রাশভারী ব্যঙ্গাত্মকে হাসে দুঃখের মহানৃত্য
লুকিয়ে শতাব্দীপ্রাচীন উলঙ্গ দগদগে ঘা;
ফুটবে সৌন্দর্যের ভাঁজ—পাঁচীর মতো দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে।

চাইলে ঈশ্বরকে বসিয়ে রেখে—
হতে পারি স্ফটিকশুভ্র এক আজন্ম তীর্থের কাক।
পারের কড়ির মতো যদি পেয়ে যাও অন্যকোনো হাত
প্রসারিত করে আত্মার সম্পর্ক, বলব না—চলো সাজাই
নক্ষত্রভরা এক বিচ্ছুরিত বৈদূর্যের বিশুদ্ধ বন্ধনী রাত।

আমারে ডেকে ডেকে বেচো যদি ফের
আদিগন্ত অদৃষ্ট হয়ে—
পুনরায় ভেড়াও অনিন্দ্য গরলের ভাগেই
মহাবিভীষিকায় বলব না, দোহাই লাগে!
পান করে সনাতনী মৃত্যু, নিয়তির কসম—
দেউলিয়া হবো এখানে সন্ধে নামার আগেই।
 


বেনজির শিকদার কবি। প্রকাশিত গ্রন্থ : নাকফুল (২০১৮), অনুভূতির মিছিলে ভালোবাসার জীবাশ্ম (২০১৯), দ্যুতিবিথার (২০২৩) তিনি জীবন খুঁজে বেড়ান—বই প্রকৃতি সংগীত ও সাহিত্য-সংস্কৃতির তিনি সপরিবারে নিউইয়র্কে থাকেন।

menu
menu