তিনটি কবিতা ।। তানবীর সজিব

ঘাতক কাঁটায় আটকে আছে প্রাণ

যে তটরেখার সকল নিশানা তলিয়েছে 
অনেক কাল আগে 
কেন সে আঁধারে থেকে যায় অস্পষ্ট ইশারা; 
স্তূপাকার ধুলো থেকে কেন জ্বলে ওঠে ঔজ্জ্বল্যতা 
যে জীর্ণ শরীর ধরেই নিয়েছিল 
আর নেই ভোরের আলোর আশা 
মন তবে কেন তার
খোঁজে অবহেলায় শত অভিলাষ 
আমি তো ঘুমন্ত নই, অসচেতন অসাড় নই
মন তবুও কেন কড়া নাড়ে অহৃদ্য এক দুয়ার— 

আসলে কেউই স্বরূপ নয়

আষাঢ়ের অবিরল বর্ষণে
নিগূঢ় নির্জনে ভিজেছি 
একা একা—হয়ে বিস্তীর্ণ জলাশয়ের 
একমাত্র সবুজের ডগা 
মাথার ’পরে ঠা ঠা শব্দের বাজ নামে
মাটি স্পর্শ করে নারিকেল গাছের কন্ধ—

অভিশাপের তপ্ত দুপুরও ছুঁয়ে যায় আমার গা
আমি আর বিরানের একটি গাছ পুড়ে হই খাঁ খাঁ
বিরানের গাছ কী তবে আমারই প্রতিরূপ,
না আমি গাছের...  
এতো কিছুর পরেও ভেবেছিলাম—
হয়তো একটা ভাঙা গাছ বুঝবে আরেকটা ভাঙা গাছের ব্যথা...

চিরবিরহী ছায়া

এখানে কি কেউ ছিল আরেক জন? 
নাহ কেউ ছিল না; বোধ করি আমি ভ্রান্তিতে জেগে রয়েছি 
রাতবিরেত—
ভুল হচ্ছে, ভুল করছি, সব গুলিয়ে ফেলছি!  
এখানে কেউ ছিল না কখনোই, 
কেউই আমার পাশে রাতের দীর্র্ঘ ছায়া হয়ে এলিয়ে ছিল না;
কেউই এমন দুঃসাহসী কিম্বা বাজিয়ে বাজিকর হতে চায়নি— 
কে’বা এমন আছে আমাদের চারিধারে যে স্বেচ্ছায় হইবে 
একাকিত্বের দোসর! 
না, এখানে কেউ ছিল না কোনোকালেই—
আমি রাতের প্রগাঢ় নিস্তব্ধ ছায়া হয়ে শুয়ে ছিলাম একা—
হাজারো রাত এভাবে একা একা—
আমি ছাড়া আর কেউ ছিল না রাতের ছায়ার বিপরীতে! 


তানবীর সজিব, কবি, বাংলাদেশ

menu
menu