গুচ্ছ কবিতা ।। সাহরান মোর্শেদ
বোধি
বরং চিত্রকর তুমি
দেখা হবে না জেনে কিছু এঁকে যাচ্ছো
ঘেমে যাওয়া বাতাস?
নাকি উচ্চারণগত ভুল?
দেখা হবে না জেনে আমিও কিছু জেনে যাই
এই যেমন— কোমল কাঁটার কাছে আমার চোখের বয়স
বিপর্যস্ত হয়ে পরিশেষ টানতে জানি
বৃক্ষ বলো বা মানুষ— ধ্যান সকলের আছে।
যুদ্ধের বিপরীতে
বাতাসের কান্না শুনি
মাটি থেকে পায়ের তলা সরে যাচ্ছে। তবু কান পেতে থাকি।
এই অসুস্থ সময়ে—
দুলছে হাওয়া
পাতার অসুখ। তার থেকে জন্ম নিচ্ছে সুর। সুর থেকে মানুষ৷ মানুষের ব্যথা।
যুদ্ধের বিপরীতে দাঁড়িয়ে, মাতাল প্রেমিক বলছে—
"প্রেমিকার চোখে কাচপোকাদের ঘুম"।
বিলাপগীতি
তারাগুলো ব্যথা পাচ্ছে
কাঁদছে শামুকের ঘরে
যাবতীয় ঋণ
যাদের কাছে কোনোদিন যাওয়া হয়ে ওঠে না
তাদের অবশ চিবুক
মুমূর্ষু চোখগুলো— ভেজা রেলগাড়ির দিকে যায়
আর পথের শেষ— পাতাদের শরীরে জ্বর নামায়।
চিত্রিত সংসার
এতো চুপচাপ রাত নেমে আসে—
নীরার পড়ার টেবিলে আলো নেই
সমস্ত রাত যেনো চোখের ভেতর
চোখ বলছে কথা, আঙুল তুলছে সুর
বাতাসের দরজা খুলে দেখি— কোনো সাড়া নেই
সাড়া দিলে কি ক্ষতি হতো?
নীরার নির্বাক ভঙ্গি— ফুলের ধারালো সুবাস
সবকিছু পেরিয়ে যাচ্ছে সময়?
কিছু বাকি ছিলো, ভুল হয়ে গেলো
নীরা তবু বসে আছে, আঁকছে ছবি
লাল, নীল, সাদা
তার ছবিতে পুতুলের সংসার— পড়ার টেবিলে আলো নেই
পুতুল ক্রমশ হাসছে...
তোমার ঘুমের ভেতর
শব্দে শব্দে ফুটে আছে ফুল
এমন নির্জন শিউলি গাছের তলায়
ফুলের স্তনে সাবলীল শব্দ ছুঁড়ে দাও
যোগাযোগ অনেক বাকি— আঘাত কিংবা আদরে
আর তোমার একান্ত আমলকী বন?
ক্লান্ত লাগে না, এমন না
যদি জানো কাকে চাও
তাকে জাগিয়ে তুলো— তোমার ঘুমের ভেতর থেকে।
• বরিশাল