গুচ্ছ কবিতা ।। চিনু কবির

ডুক্রে ওঠে
শহরের নামকরা বিদ্যালয়। সন্তান ভর্তি হতে পারলে
বাবা-মা খুব খুশি। আমরা বলি সন্তান মানুষ হচ্ছে।
অংকের পাশে সর্বস্ব হারানো বাবা-মা। সবশেষে ডুক্রে ওঠে।
ঠোঁটে কামড় পড়ে
ঠোঁটে রক্ত। আমাকে কেউ মনে করে না
দিঘির ভাঙা জলে ভাসিয়ে দেয়া
কাগজের নৌকোগুলো আবার ফিরে আসে
আম্মা বলতেন, তোকে কেউ মনে করছে...
আমার মনে হয় ডাক্তার দেখানো দরকার—
কোলাহলপূর্ণ রাস্তায় একাকী হেঁটে গেলে
ঠোঁটে কামড় পড়ে।
চশমা
ফাঁকা স্টেশন, মা মা লাগছে...
লাইন স্পেসে শূন্যতা দাঁড়িয়ে
ঘুমের আলোয় পথ দেখে নেব
চশমা, ছিঁটেফোঁটা অলস কৌতুকের ভেতর বড় হচ্ছিল
বুনোফুল
বন ও প্রজাপতির নোটবুক। তখনো ফরেস্ট হয়নি।
রজনীগন্ধা কড়া এক পারফিউম। এখন কৃষকের
জমিতে ফোটে। পাশের ধাঙর পট্টির মেয়ে রজনী
পাশে এসে দাঁড়ালে রাত্রির বনে পথ হারিয়ে ফেলি।
তখনো চাঁদ ওঠেনি, ফিসফাস বনের অচেনা আওয়াজ
রজনীর শরীর থেকে অশরীরী সব। জানি না সরীসৃপের
মতো কার গরম শ্বাস নুনের মতো গলিয়ে দিচ্ছে।
অনেকদিন পর চাঁদের বৃষ্টিভেজা রাতে বুনোফুল।
অথৈ চাকা
অবাক ঘুর্ণন ছুটে চলে
আমিও ছুটে চলি পিছে পিছে—
পেরিয়ে যাচ্ছি কয়েক রীম মাঠ
অথৈ চাকা শৈশবের ধূলিপথে।
হাভানা
পকেটে কোকিল ডেকে উঠলে চমকে যাই; বললাম,
সিয়েরা মিয়েস্ত্রা। হাভানা আমার পুরাতন প্রেম।
এবারের শীতে ক্যারিবিয়ান মেয়েদের সাথে ফসল
কাটতে গিয়ে অনেক নাচ গান হবে। ওদের প্রেম ও
বন্ধুত্ব ভাপ ওঠা কফির মতো।
নাকের ডগায় সাম্রাজ্যবাদ রেখে হাভানার কোকিলগুলো
এখনো ডেকে যায়।
চিনু কবির কবি ও সম্পাদক। লেখালেখির শুরু হয় ছোটকাগজ দিয়ে। সম্পাদনা করেন ছোটকাগজ ক্যাথারসিস। তিনি রংপুরে বসবাস করেন।