গুচ্ছ কবিতা ♦ নুসরাত নুসিন
চোরাস্রোত
পুনরায় যখন ফিরে এলাম, দেখি আর নেই
পারফিউম সুবাতাস
নরম সুঘ্রাণ
ছড়ানো কৃষ্ণচূড়া
বর্ষার মতো ভেজা।
পাতার সুদৃশ্য ফাঁকের মতো
চোরাচাহনি
সলজ্জ হৃদ্যতা
মায়াময় প্রাবল্যের ঝোঁক
বর্ষণ ঘন না হতেই
চোরাস্রোতে গেল ভেসে।
প্রাচীর
আগুন কি ভাঙতে পারে স্বনির্মিত আগুন দেয়াল?
একটা গুহার প্রাচীরে আটকা পড়েছি। ধূলি—ধূসরিত ধোঁয়া।
ধোঁয়াগুলো বাষ্প গলে নদী হয়ে চলে।
আমারও জানা আছে পথ। তবু অনিচ্ছুক—ইচ্ছুক
জ্বলে যাই।
ভাবি আগুন তার প্রাচীর ভাঙুক
নিজে।
ভুল চৈত্র
নদী বলে সমুদ্রেই যেতে হবে কেন?
বিভ্রান্তির অন্তর্জাল ছিঁড়েফুঁড়ে প্রজাপতির পাখনা
নিতে ইচ্ছে করে না আর!
ভুল চৈত্রে বাসনা চৌচির। বক্রবেগে ছড়িয়ে
যাচ্ছে দিক বিদিক...
পদ্মানগর
দেহের সামনে পদ্মানগর—এই জল এই দেহ আচঞ্চল জমিন চর
সন্ধ্যা নামলেই প্রায়ান্ধ অন্তঃপুরে গৃহবাসনার মতো জ্বলে ওঠে
সন্ধ্যা পেরলেই অদৃশ্য ধু ধু।
বহুধা বিস্তৃত বহুদূর।
প্রকৃতিজ বনজ আদিম নৈকট্য এখানে অনাদিকাল। এই পদ্মানগর-আচঞ্চল বালির গতর।
ভিজে জলবালির শীতল স্নান...
অকুলে জলের ঝাপটা...
মায়াময়
কবেকার রূপকথার অতল খুঁড়ে আবিষ্কার করেছি এক
অচিনপুর মায়া।
ওটা আমার নামের অঙ্গে ছড়িয়ে ছিল। তারপর
স্মৃতিতে স্বাভাবিক ফসিল হলো।
... পুনর্জন্ম হয়েছে আজ
ঠিক যখন আমিও ফিরছিলাম সেই পুরোনো পথেই।