তি ন টি ক বি তা
পাখি-জীবন
এই যে পাখি-জীবন নিয়ে হাঁটছে সময়
আমি তার অভ্যন্তরে ঢুকি, অন্বেষণ করি
যা কিছু প্রাপ্তব্য সবটাই তুলে নেব ঘরে
আমার উঠোনে ধানখোলা, সম্পদের সুখ
স্বস্তির আল্পনা এঁকে রাখে রোদের মকাই
অসুখের দিনগুলো পার হয়ে আরোগ্যের
সফেদ বিছানা জড়িয়েছে আমাকে প্রভূত;
আমি নীলবর্ণ তারাদের দেশে উড়িয়েছি
ঘুম, যা স্বপ্নের অবশিষ্ট প্রবাহিত আলো
সভ্যতা আমাকে দেখে, যেন অপলক চোখ
বিস্ময় মাখানো অভিভূত আমি শুধু কাঁপি
পাখি-জীবন নিয়ে সময় মুখ টিপে হাসে।
শান্ত শীতলপাটি
অবশিষ্ট ক্ষোভ নিয়ে রাত্রি দাঁড়িয়েছে
হিম পড়ে শব্দহীন, তারারা তাকিয়ে
অসহায় মানুষেরা ঘুমিয়ে কাঁদছে
স্বপ্নে কেউ জেগে আছে? অধরা ইচ্ছারা
ফাঁকা মাঠে গোড় দেয়, বিষণ্ণ বাতাস
গ্রাম ছাড়ে, অহরহ আক্রান্ত পৃথিবী
দীর্ঘশ্বাস ঘাড়ে নিয়ে হেঁটেছে নীরবে;
তবু এই নীলবর্ণ আলোর উদ্ভাস
লুপ্তপ্রায় সভ্যতার জেগেওঠা গান
নির্বাক জাগিয়ে রাখে নিদ্রাহীন রাত
সব ক্ষোভ উপশম, নিবৃত্তির ডাক
আমাকে দিয়েছে এক শান্ত শীতলপাটি।
আলোর প্রত্যাশা
উজ্জ্বল আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মানুষ হাঁটছে
নরম রোদের থেকে স্নেহ, পিপাসার জল
মুখোমুখি হাত পাতে সাগ্রহ প্রত্যাশা
তারপর যে অপরাহ্ন, অভিসার মাখা
রাতের প্রোজ্জ্বল দ্যুতি, সবই নিপাট
ভাঁজে ভাঁজে বিনাশের পদচিহ্ন আঁকা;
অপার্থিব আলো দেখি সামনের বাঁক
তারার কম্পনে জাগে নৈঃশব্দ্যের মায়া
জাগতিক গান বাজে ফেরিঘাটে নৌকো
ভ্রমণের ঘোড়া টানে সভ্যতার রথ
অক্লান্ত শ্রমের ঘামে নির্মিতির স্তব
আমাদের অন্ধরাত্রি তপস্যার ফল।
উজ্জ্বল এই আকাঙ্ক্ষা মায়ারাত্রি ভাঙে
চরাচর জুড়ে শুধু আলোর প্রত্যাশা!
রবীন বসু কবি। প্রথম কবিতা প্রকাশ পায় অশোক সেন, শঙ্খ ঘোষ সম্পাদিত বারোমাস পত্রিকায়। সাতটি কাব্য, একটি উপন্যাস ও তিনটি গল্পগ্রন্থ। মহাশ্বেতা দেবী স্মৃতি পুরস্কার, প্রভাতকুমার সরকার স্মৃতি পুরস্কার ছাড়া দুটি জীবনকৃতি সম্মাননা। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে থাকেন।