.,
বাস্তবতা
বারবার স্লিপ মোডে যেতে যেতে
আজ দেখি ঘুমই ভাঙে না তাঁর।
অন্ধকারে আমি আছি একা
মাঝে মাঝে একা থাকা ভালো,
মিথ্যেরা ছুটি নিলো আজ
ওঁম শান্তি, শান্তি বলে বন্ধ রাখি চোখ।
চারপাশে কর্ম ব্যস্ততা—
মুখগুলি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখি
অবয়ব পাল্টে পাল্টে যায়
প্রতিটি মুখেই নানা রেখা ঘুরে ফিরে
সে সব রেখার সাথে পরিচিত নই।
অন্যরকম এক উপলব্দি নিয়ে
আমিও স্লিপ মোডে দ্রুত চলে যাই।
প্রথম সকাল
আলোর রোশনাই দেখে এগিয়ে গিয়েই দেখি মহীরুহ
দীর্ঘ কাণ্ড তার ছুঁয়েছে আকাশ
ফল ফুলে সুশোভিত
ডালে ডালে পাখির কূজন
অন্ধকার দূরে দাঁড়িয়ে আছে একা, ভীত
তার মুখে বিষাদ লেগে আছে ছায়া সদৃশ।
এমনই হয় আলোকে ভয় পায় সব কালো
সব বিল্বপত্র আর লাল ফুল অর্পণ করি
উলুধ্বনি প্রকম্পিত করে এই আকাশ বাতাস
সধবার কপাল থেকে এককণা সিঁদুর এনে
লেপটে দেই তার গাঢ় বাকলে...।
বড় ভালো লাগে এই প্রথম সকাল।
ভাঙনের শব্দ শুনে শুনে
কোন মন্ত্র না জেনেই জোড় হাতে প্রার্থনা করি
কে বা জানে তাঁর কাছে পৌঁছাবে কি এই অনুনয়
না জেনে মুখস্থ আমি করিনি তো কোনো পাঠ্যক্রম
এতে যদি ভুল থাকে, সেই দোষে শতভাগ দোষী আমি জানি।
ঋতু বদলের সাথে বদলায় সবুজের শেড
বসন্তকে যতোই গুরুত্ব দাও তার আছে ধূসর স্বভাব
রোগ শোকও আমন্ত্রণ জানায় সে প্রতি দিন রাত
আমি তাই তার থেকে দূরে দূরে থাকি।
বিপন্ন বসতি নিয়ে দিন যাপনের গ্লানি মাখি
সেই গ্লানি আস্তরণের পর আস্তরণ হয়ে লেগে আছে
বিচ্যুত হতে আর পারি কই সেই গ্লানি থেকে
তোমরা যারা নদীহীন সমতলে আছো, দাওনি তো সাহসের এক ফোঁটা জল।
জেনে গেছি ভাঙনের সুর নিয়েই যেতে হবে যতো দিন আছি
ভাঙনের শব্দ শুনে প্রতিনিয়ত এই ভঙ্গুর মন নিয়ে এই আমি বাঁচি।
চন্দনকৃষ্ণ পাল কবি। ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে উপ-পরিচালক (অর্থ) হিসাবে কর্মরত আছেন। ১৯৯২-৯৩ সালে লিটলম্যাগ দ্রষ্টব্য’র সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সম্পাদনা করেছেন ছড়াপত্র প্রবাহ, চান্দ্রেয়ী, একফর্মা ছড়াপত্র, কবিতাপত্র নৈ।