পাঁচটি জীবন্ত নাম্বার

যেভাবে গান হ'য়ে ওঠো
কোমল, প্রসারিত রহস্যঘন ছায়ায়

এ বেলা যাক না এমন— ধানের গন্ধ মেখে
চিত্রিত দেহে কী মধুর ফুলের হাওয়া!
অন্ধকারে বিদীর্ণ ছায়ার ঘ্রাণযান
কোথায় চলেছে ওই— বিবস্ত্র?

লেবুজলে তৃষ্ণালু দুপুর— 

যেভাবে গান হ'য়ে ওঠো
চৈত্রের তীক্ষ্ণ হাওয়ায়—

২.

বৃষ্টির মতো রোদ। শুক্তি জানে— কতটা ভাঙন হ'লে— এমন নৈঃশব্দ্য তৈরি হয়। বিজন দেহের ভিতরে— সীমাহীন শুকনো দুপুর। তারপর, অনন্তের দিকে চলে যাওয়া, ক্রমশ— আত্মলীন...

চলে যাবার ভঙ্গিতে থেকে যাওয়া। এই তো। 

মাটির শরীরখানা পড়ে রয়েছে দেখো। সারা অঙ্গে যার কবিতা খেলা করছে শিশুটির মতো। দূরে তবু দুর্বোধ্যতা নিয়ে বেজে চলেছে অর্থশূন্য জীবন। বেজে চলেছে তো চলেছেই—

৩.

কথা আছে। কথা নেই।
কাঁপছে মূর্তি— বিদীর্ণ সুরৎ তার—

তিমির, অসিমীত তিমির 
চোখ নেই— তবু কত দেখা

ঘুমের ভেতর আলোচ্য পিকাসো
যেন আহ্লাদিত মুখ তোমার
কেঁপে কেঁপে উঠছে— ছায়ার মতো

স্মৃতিহীন জানলার পাশে ব'সে
বাংলা ভাষায় নিঃশ্বাস নিচ্ছি
এমন দীর্ঘতম রাতে, রসঘন রাতে...

৪.

হাওয়ার কঙ্কাল পড়ে আছে
তুমুল ঘোরের ভেতর
সেই যে উড়ে গেলো বাঙালি মাছরাঙা
ব্যক্তিগত দূরত্ব ছাড়িয়ে

রোদের শরীরের ক্ষত
মাতাল সঙ্গমতৃষ্ণা—
সব এখানেই থাক, নিরিবিলি

সবুজ পাতার পাখনা তোমার
বসে আছো সুষম— বেলা তারের জাদু দেখবে ব'লে

৫.

মরলে নিশ্চিত ছবি হ'য়ে যাবো
এই সমস্ত ক্ষুধা— কোথায় থাকবে তখন?
এই সমস্ত বন্দুকের আওয়াজ— শুনতে পাবো না বুঝি?

কখনও বেঁচে না থেকে
এমন মরে যাওয়া
অপূর্ণাঙ্গ দৃশ্যের মতো

মরলে নিশ্চিত আর মরা যায় না
নাহলে এই পারমাণবিক খেলা থেকে
কোনোদিন রেহাই মিলতো, বলো?

ঠিক যেমন ভাতের অভাবে
পাকস্থলি হ'য়ে যায় মরুভূমি

কত রঙের ঈশ্বর আছে— তোমার, আমার
যদিও যুদ্ধবিমানে ভরে নিয়েছি পৃথিবীকে

তবু দেখো
ফুল নেই— পারমাণবিক বোমা আছে
প্রেম নেই— সীমান্ত আছে
পেটে খাবার নেই— ঈশ্বর আছে, ঈশ্বর থাকে— ছবি হ'য়ে


 সাহরান মোর্শেদ, কবি, বরিশাল

menu
menu