জলপাই বিষাদ পায়রা
(তাসনুভা অরিন অর্জন করেছেন জীবনানন্দ পাণ্ডুলিপি পুরস্কার-২০১৮ । প্রথম কাব্য ত্রিকালদর্শী বেলপাতা প্রকাশ করেছে প্রথমা। বৈভব থেকে প্রকাশিত জলপাই বিষাদ পায়রা। আলোচ্য কাব্য থেকে ৫টি কবিতা ঘুংঘুর-এর পাঠকদের জন্য)
উপবৃত্তের পথে ঘুরে ঘুরে
শরীরে একটি সূর্য পুষলে
উপবৃত্তের পথে ঘুরে ঘুরে
বেমানান জীবন, বিন্দুর মোহে
ইকারুস হয়ে যায় ।
তার কপালে সূর্যের লাল ঘাম
আগুন সকালে খুলে নেয় ঘুম।
চন্দ্রবিন্দু
মানুষের খেয়াল তার লোম সংখ্যার চেয়ে বেশি।
তাকে ঢেউ হতে বলি
সে হয় বুদবুদ—নিঃসঙ্গ ও বিলীন।
তাকে পা ভাঙা চড়ুইয়ের মতো ধূসর দেখি
দ-অক্ষরের মতো হতাশ।
আমাকেও বিপরীতে দেখে কেউ
ক্ষ- এর মতো ভালোবাসে।
অথচ, আমি কি চন্দ্রবিন্দু হতে পারি প্রতি অক্ষরের?
পায়রা শপথ
করবী ফুলের কাছে নেমে এলো ধীর পা ছায়া,
দুঃখ ছড়িয়ে দিচ্ছে আট পা, চুয়াল্লিশ মাথা।
আমরা শপথ করেছিলাম
কবুতর পুষবো
আমরা দুঃখ পুষলাম।
অজান্তে তোমার দুঃখ আমার হলো
আমার দুঃখী রুমাল তোমার কপালের জলপট্টি হলো।
এভাবে একাকার আমরা কি খুব সুখী হয়ে
কড়া রাতের সমুদ্র দেখতে পারিনা !
বাতাস বয়ে নিয়ে আসবে পায়রা শপথ।
পাখিরা দেশ ছেড়ে চলে যায়
বাঁশপাতা ঘর
নিবিড়ে নেমে আসে জ্যোৎস্না
আমি তাকে ছুঁই, না ছুঁই
থেকে যাচ্ছে তামসিক
মদ ও বলির মাংস, বর্ষবরণে
দিনপঞ্জিকার সংখ্যায়
৩৬৫ মুদ্রা।
আমি তার সাকার বয়ান
তবু কি যাচ্ছেনা ভুলে মেঘ, মেঘের গমক
ঢেউ থেকে সরে সিল্কের স্যাটিন সালোয়ার।
কোথাও খুনের ভাষায় কথা বললে
পাখিরা দেশ ছেড়ে চলে যায়।
এত ফুল কফিনে শোভা পায়
আমাকে দাও
হেমলক আর হ্যাঁমেলিনের বাঁশি।
তোমার শহরে কবুতর থাকবে না,
অথবা ঘড়ির ঘণ্টা।
আমরা পান করবো
গাড়ির ইঞ্জিনের সবটুকু পথ
এপিটাফের সব পদবী
এই ছিল পৃথিবী—
এত ফুল কফিনে শোভা পায়।
• তাসনুভা অরিন, কবি, ঢাকা