গুচ্ছ কবিতা ।। মাসুদুল হক

কাচের আকাশ
আকাশকে আমার কাচ মনে হয়
কাচের পেপার ওয়েটের ভেতর
যেমন একটা আকাশ থাকে
আকাশের ভেতর তেমন অনেক জল;
মস্ত একটা সমুদ্র
কতো রঙ নিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে
সমুদ্রের নিচে মাটি নয় বাতাস
বাতাসের মধ্য পাখিগুলো উড়ে বেড়াচ্ছে
আমি একটা কাচের পেপার ওয়েটে
আকাশ ভরে সেখান সূর্য খুঁজে বেড়াই
আর ভাবি মেঘ যদি জল হয়
জলগুলো আকাশে ঘুরে বেড়ায়
অথচ একটুও গড়িয়ে পড়ে না
বৃষ্টি তো মেঘ নয় আকাশের কান্না
কাঁচের ভেতর বৃষ্টি নয় মেঘ থাকে
বিমোক্ষণ
চলো আমরা দুজন পালিয়ে যাই
তোমার সুষমাবৃত শরীরের মহাদেশে
এতো সম্পদ, ঘাটে ঘাটে এতো মনিমুক্তো
পর্বতের চূড়ায় রহস্যের সরোবর
অথচ মনের ভেতর জ্বলছে অগ্নিগিরি
আমি একটা ছোট্ট দ্বীপ
সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে
অবরুদ্ধ বাতাসে ঘুরপাক খাচ্ছি;
প্রয়োজনের নদীতে সীমিত জলে স্নানক্লান্ত
চলো আমরা দুজন পালিয়ে যাই
গিয়ে উঠি কোনো কামপাহাড়ে
খুন
আজ মনটা ভালো নেই
বুকের ভেতর হুহু শূন্যতা
যা কিছু চাওয়া ছিল তা পূর্ণ করে
আজ মন চাইছে পুনর্জন্ম
সময়ের কাছে দাসখত লিখে
এতো দিন ছিলাম অবরুদ্ধ পাহাড়ে ঘুমিয়ে
তুমি কেন জাগিয়ে দিলে;
তোমার কামনার নদীর জলে কেন ভিজিয়ে দিলে
আমি তো ভালই ছিলাম পাহাড় হয়ে
আজ মনটা ভালো নেই
ইচ্ছে করছে নিজেকে খুন করি
প্রস্তাবনা
মীনাক্ষী কাল গ্রামে ফিরে যাবে
মহানগর ওর হাড়ের খাঁচায়
নোনা ধরাতে ধরাতে
শরীরের চুনে ক্ষয় জমিয়েছে
মীনাক্ষী আজ শহরের বুকে একলা গ্রাম;
রাত্রি হয়ে জেগে আছে
শহরের শশ্মানে শ্মশানে
আজ যতো আলো জ্বলে
যতো আলো রেস্তোরাঁ ক্যাফে আর ক্লাবে
সব আলো নিভিয়ে
মীনাক্ষী কাল গ্রামে ফিরে যাবে
ওখানে ওর জোনাকি বন আছে;আছে জ্যোৎস্না নদী
সূর্য-পোড়া তেঁতুল দুপুর,হাওয়ার সমুদ্র
ছায়ার মতো সন্ধ্যারাত দাঁড়িয়ে থাকে
মীনাক্ষী কাল বুকের মধ্যে গুজে রাখা
গ্রামে ফিরে যাবে
অথচ আমার কোনো গ্রাম নেই
জ্ঞান ও সক্রেটিস
একজন জ্ঞান মাথায় নিয়ে ঘোরেন
তার ডান হাতে দীর্ঘদিন;
বাম হাতে ধন আর সম্পদ
তাকে মানুষ এখন সক্রেটিস নামে চেনেন;
তিনি লাইব্রেরির পুরনো ঘরে ঘুমিয়ে থাকেন!
• দিনাজপুর