গুচ্ছ কবিতা ।। তানিয়া হাসান 

সিঁথির সীমা

ভেজা চুলের বিন্দু ঘাম 
ঝর্ণা দেখেনি কখনো
সিঁথির সীমায় আঙুল রেখে 
আকাশ ফেরি করা 
তেমন বিলাসিতা নয়,
ডাহুকের কাজল চুরি চেয়ে
চৌকিদারের লণ্ঠন ডাকাতি
বেশ সম্মানজনক 
লেবুপাতায় মৌন মন্থন করে  
রসের হাঁড়িতে ঠোঁট 
ভিজাতেই পারেন।

ঢেউয়ের উপর হাঁটতে 
শিখানো ভুলে যাওয়া 
সুখের কথা না হয়    
ভুল শাস্ত্রে জমা থাক,
অর্বুদ কাল ম্যাডিটেশনরত 
কুহুলিকে ডিস্টার্ব
না করাই ভালো

হারিয়ে ফেলা আর 
পেয়ে হারানো খেলার 
অধিনায়ক যখন 
দর্শক গ্যালারিতে  
লুকোচুরি লিরিকে ব্যস্ত...
ছুঁইছুঁই আঙুরের থোকা 
ছুঁয়ে না দেওয়া 'ই শ্রেয়।

শিশির উড়া ভোর 

লোনলি চা চিবায় ঘুম মিষ্টি হাসে 
স্বপ্নের স্রোত ফিসফিস শপিংমলের ঠিকানা 
হারিয়ে পিঠার টঙ্গে গতর ভাসায়
ভাবের সিলেবাস শজারুর উঁকুন বাছতে ব্যস্ত,  

রংধনু তুমি বরং তিব্বতে লুকোচুরি খেলো   
ব্লাক ডায়মন্ডের খোঁজ না পেলেও 
হতে পারো নীলায় নিঃশেষ... 

মেহগনি বাগানে আমের বস্ত্রহরণ হলে 
একঝাঁক শকুনের বসন্তবিলাস  
সিসিক্যামেরায় দৃশ্য বন্দি হবে না, 
কাকতাড়ুয়া যখন কমলার আঙুল চুষে
কাকের নবান্ন উৎসব না জমে কি উপায়!

পঙ্গু সাইক্লোন আকাশি ওড়না পরলে 
আকাশের জাত যাবে কি?
তবে বাষ্পীয় ল্যাম্পপোস্ট সেরা কলামিস্টের
সম্মাননা পেতেই পারে

এ কারণে সকাল 
আত্মঘাতির কলম চুরি করবে না... 
শিশিরের মাঝেই সমুদ্রের বাস,
উড়বে'ই আকাশ, আজ অথবা কাল...

ফিনিক্সের ডানায় বিকেল

কমলার ঘ্রাণে সন্ধ্যা সকালের বারান্দায়  রোদে পুড়েছিলো
ঈশান কোনে আনন্দ মোহড়ায় মেতেছিলো বৃহস্পতি...
সারি সারি উটপাখির গাছে চড়ার প্রাকটিস পাগলামি বললে ভুল হবে,
তবে কমলা জুসের গ্লাস চড়ুইয়ের হাতেই,
বাগানের প্রাচীর ভাঙলেও চৌকস পাহারাদার!!
দুপুরের  তাড়ায় শার্টের বোতাম ছোঁয়া আর হয়নি   
নীল না পেলেও আকাশ কিন্তু আপনার.... 
মেঘ নেই তবে  বৃষ্টি রান্না করতেই পারেন
ব্যাঙেরছাতা খুব ছোট পরিসর নয়
ফিনিক্সের ডানায় তুমিকে উড়িয়ে
ফড়িংকে একটা বিকেল দিতেই পারেন...
দ্বিপ্রহরের তাতে জন্ডিস হবে না।

শ্লেষ ডোঙায় বসন্ত

মুমূর্ষু নদী আর মাছের রিলেশনের 
ডেফিনিশন যাই হোক,
একটা করুণার স্রোত বইতেই পারে
কম্পোজিশনের স্বার্থে
উড়তে পারে একটা সাদা কাক  
উষ্ণ বাষ্পে!

তবে ভুল সন্ধ্যায় শ্লেষ ডোঙায়  
কবি যে জর্জীয় স্বপ্নে ডুবেছিলো
এতে স্থির রক্তে কিছুটা কোলাহল 
জাগলেও প্রেম হয় না মোটে,
জোনাকির ওষ্ঠে ফসফরাসের 
বাবল উড়লে আমলকি গিলে ফেলা গেলেও,  
গন্ধক ছোয়ার ইচ্ছে বোকামি। 

অর্ধহাসি মুঠো বন্দি রেখে চান্দুর করুণায় 
খাপছাড়া ভাদ্রের বারান্দায় ঘুরে আসলে    
কোকিল ডাকবে কি?

গাইবে কি ঝিঁঝি রবীন্দ্রসংগীত 
অমাবস্যার দুয়ারে!
মেহগনির মুকুরে বসবে কি তৃষ্ণার্ত প্রজাপতি

নদীটা তৃপ্ত ছিলো, ডিঙিটা সুখি
তবু ভুল স্রোতে বসন্ত ডাহুকের আস্তিনে...
রঙ থাকলে সিঁথি রাঙে, সাদা হয় শাড়ি!
রঙের দণ্ডের বিধান নাই।

খুচরো চার্জশিট 

অভিমানের অভিমান অ-অ-অ... উচ্চাঙ্গসংগীত 
বৈরি পাথরটা ভাঙতে খুচরো পাথরের খোঁজ...
খুচরোয় ইদানীং রোমাঞ্চ মেলে না 
চার চোখে প্রতিজ্ঞিত চার্জশিট 
শেয়ালের ঠোঁটে চাঁদ!

তিন স্তর বিশিষ্ট জল বিশুদ্ধকরণ ফিল্টার 
নাভীমূলে অর্বুদ ঘাম
লকলকে জিহ্বা ওম ওম বিশুদ্ধ অভিযান... 
ফুটফুটে মাছ,  ভেজা নীল পাটের আঁশে;
গর্ভবতী চন্দ্রপুকুর। 

এড়িয়ে যাওয়া ব্লাকবোর্ড    
সাব্জেক্ট+উপস্থিত =০  
হৈ হৈ ক্লাসরুম 
নিউটনের চশমা হারানোর বিজ্ঞপ্তি।


• ফরিদপুর

menu
menu