।। গুচ্ছ কবিতা ।।

গোলপোস্ট জানে
বালিকা থ্রু পাসে বল মাঠ চিরে দিলে
খেলা শুরু হয়েছিল ময়দান জুড়ে
সবুজ ঘাসের বুকে আলপনা আঁকা
ক্লাসিকাল ডজে মাত ডিফেন্ডার কথা
ভুল রিসিভিঙে কেটে ফাইনাল পাস
যেদিন বিকেলে খেলা শেষ হয়ে গেল
সেন্টার লাইনে চকের সরল রেখা
মুছে দিল অস্তরাগে সুবর্ণ গোলক
সেদিন ওভারল্যাপে তছনছ করে,
চুমু খেয়ে ফেরা শটে গোলপোস্ট জানে,
থ্রু পাসে চেরা গ্যালারির ভাঁজে; বালিকা
থেকে যাবে ঘামে ভেজা শেষ জার্সি জুড়ে।
ছাপোষা ব্যাকড্রপ
ছাপোষা গৃহীর ব্যাকড্রপ জুড়ে বই
জানে মগ্ন পাঠের প্রকৃত ইতিহাস
VIP মাথায় মধ্যবিত্ত আলমারি
পরিত্যক্ত ব্রাহ্মণ্যের অভিজ্ঞান হয়ে
নাইলন দড়ি থেকে দোল খায় পৈতে
জানি এই আমি তোমার অচেনা খুব
নুন মরিচের মুখর সজ্জার বেশ,
চশমার স্টিল ফ্রেমের আড়ালে উঁকি
দেয় একজন অতি সরল মানুষ
যদি ভালো লাগে, শুধু তাকে মনে রেখো।
তৃতীয় প্রহরে
ক্লান্ত সিঁড়িপথ বেয়ে শহরে নিঝুম
রাত নেমে এলে, আলোকস্তম্ভের নিচে
ভিড় করে সারা দিনের বিমূর্ত ছবি।
নির্জন পার্কিংজোনে না বলা গল্পের
আগল হঠাৎ খুলে ডাক দেয় কেউ।
গভীর রাতের একান্ত নগরী বোঝে,
প্রত্যেক আলোছায়ার নিজস্ব কাহিনি।
এখন আগুন নরম অপাপবিদ্ধ
এখন কবির শব্দের চয়ন মৃদু,
মালকোষ রাগে মেশে তৃতীয় প্রহরে।
বড়দিন
উৎসবের রাত্তির শেষ হয়ে গেলে,
পরিত্যক্ত একটি টেবিল ঘিরে পড়ে
থাকে দু’জোড়া চেয়ার; তিনটি জানালা
তখনো আলো দেয় নিভৃতির রাস্তায়।
ঘুমিয়ে পড়ার আগে, কাফে’র জানালা
থেকে শেষ বার উঁকি দেয় বৃদ্ধ সান্তা;
আর চির নিদ্রাহীন আমি, আলোছায়া
মেখে টুকে রাখি অন্তরে, যেসব গল্প
বলা হয়নি, অযুত সেই সম্ভাবনা।
সমস্ত পাণ্ডুলিপি প্রকাশিত হয় না।
পরমার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় কবি। প্রকাশিত বই : মাইক ব্রিয়ারলি তদন্তনামা প্রথম খণ্ড (ছ’টি রহস্য উপন্যাসিকা), মাইক ব্রিয়ারলি তদন্তনামা দ্বিতীয় খণ্ড (চারটি রহস্য উপন্যাসিকা), প্রান্তিক স্টেশনে একা (কবিতার বই)। তিনি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় বসবাস করেন।