পালঙ্ক
টানা দশ মিনিট দরে দাঁড়িয়ে আছি গেটের সামনে, বেশ কয়েকবার স্টিলের গেটে হাত দিয়ে নক করতে গিয়ে এখন হাত ব্যথা করছে। গেটের উপরের লক খুলতে চেষ্টা করেছি কিন্তু সেটাও এত শক্ত যে সুবিধা করতে পারছি না। পকেট গেটটারও ভিতর দিয়ে আটকানো, ঠেলাঠেলি করলাম বেশ কয়েকবার, কিন্তু ফলাফল শূন্য, লাভ হলো না কোনো। পাঁচিলের আশে পাশে কোনো কলিংবেলও নেই, কি একটা ভুতুরে বাড়িরে বাবা! মানুষজন সব মারা গেছে নাকি? তিন তলা বাড়িটার দোতলা এবং তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে গেটের বাইরেরটা দেখতে পাবার কথা। কিন্তু সেখানেও এপর্যন্ত কারো ছায়া অবদি দেখতে পাওয়া যায়নি। আশে পাশের বাড়িগুলো সব দশ তলা-বারো তলা, মাঝখানে এ বাড়িটাই যেন ঝিম মরে বসে আছে। আশেপাশের বাড়িগুলো থেকে আবার কেউ তাকিয়ে নেই তো? সচেতনভাবে এদিক ওদিক তাকাই, কাপড় ঠিক ঠাক করি।
ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ, শীত যাই যাই করে এখনো যাচ্ছে না, তাই একটা ফুলহাতা গেঞ্জির ওপরে জ্যাকেট পড়ে বের হয়েছি। আজকাল জ্যাকেট অনেক সস্তায় পাওয়া যায়। ঢাকা কলেজের উল্টোদিকের দ্দোজা মার্কেট থেকে ছয়শো টাকায় কিনেছিলাম এটা। তবে সেটাও নিজের ইচ্ছায় নয়, ওই দিন রুমি ছিল সাথে। রুমির আগামী মাসে নরওয়ে যাবার কথা সেজন্য কিছু গরম কাপড় কিনতে বের হয়েছিল, আমাকে মার্কেটের সামনে পেয়ে ছাড়লো না ভিতরে নিয়ে গেল। কেউ কেনাকাটা করতে থাকলে পাশে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকাটা বেমানান তাই হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখা জ্যাকেটগুলো নাড়াচাড়া করছিলাম সেটা দেখেই রুমি ভাবলো আমি জ্যাকেট কিনব এবং এরপর একরকম জোর করেই আমাকে কিনতে বাধ্য করলো এই গাঢ় বাদামি রঙের জ্যাকেটটা। আমার পকেটে যথারীতি টাকা ছিল না, রুমিই কিনে দিল। রুমি আমার খালাতো বোন। কয়েক মাস আগে বিয়ে হয়েছে। ওর বর পলিটেকনিক ইঞ্জিনিয়ার কিন্তু নরওয়েতে কি কাজ করে জানি না, সে দেশেও নাকি আছে প্রায় ছয়-সাত বছর। রুমি আমার থেকে এক মাসের বড় তাই ওর সঙ্গে আপন ভাই বোনের মতো মারামারির সম্পর্ক। যাই হোক এই রোদে দাঁড়িয়ে রুমির কথা ভাবার মতো কোনো কারণ নেই। নিজের পায়ের দিকে তাকাতেই মনের দিক থেকে কেমন গুঁটিয়ে যাই। আমার পায়ে নিতান্তই সাধারণ রঙ জলা বেল্টওয়ালা সেন্ডেল। সেন্ডেল জোড়া পানিতে ভিজে, ধুলো ময়লা লেগে যে অবস্থা দাড়িয়েছে তাতে আমল করা কঠিন এর রঙ আসলে কি ছিল আর তাছাড়া জ্যকেটের সঙ্গে একজোড়া পাম্পশু না হলে বেমানান। কিন্তু আমার ওই এক জোড়াই সেন্ডেল। বাসা থেকে বের হবার সময় সব ঠিকঠাকই লাগছিল, কিন্তু এখন কেমন যেন লজ্জা করছে। দাঁড়িয়ে থাকতে আর ভালো লাগছে না, এদিকে রোদটাও চড়া হচ্ছে, ভিতরে ভিতরে ঘামছি কিছুটা গরমে কিছুটা অস্বস্তিতে।
পাশেই যে আর একটা দোতলা বাড়ি এতক্ষণ খেয়াল করিনি কেন কে জানে? একটা বাচ্চা ছেলের মিহি কণ্ঠ শুনে তাকাতেই দেখি ছাদের দড়িতে মা, ছেলে মিলে ভেজা কাপড় নাড়ছে। আমাকে দেখে জিজ্ঞাসু দৃষ্টি চোখে মুখে। মা- মেয়েটি গলা বাড়িয়ে কাউকে ডাক দিল, ‘রহমত ভাই, আমনাগর গেডে কেউ আইছুন, দেহেন... রহমত ভাই..." বাড়ির ভিতরে একটু সাড়া পেয়ে আবার গেটে শব্দ করি, হ্যাঁ, এবার মনে হল কেউ একজন দেখেছে, যাক একটু স্বস্তি পাওয়া গেল। একটু বাদেই পকেট গেটটা হাঁ হল। ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ বছরের এক কালো, তাগড়া, গোঁফওয়ালা লোক মাথা বের করে জিজ্ঞেস করল
—কাকে চাই? আচ্ছা ইনিই তাহলে রহমত ভাই, কিন্তু রহমত নামের লোকদের চেহারাতো এমন কঠিন হওয়ার কথা নয়, রহমতের কোনো ছিটেফোঁটা নাই চোখে মুখে। উত্তর দেই,
—জাভেদ সাহেব, অটোবি শো রুম, পান্থপথ থেকে পাঠিয়েছেন
—আচ্ছা আসেন। বাইরের থেকে বোঝার উপায় নেই বাড়ির ভিতরটা এতটা বড়। আমাকে একটা বড় ড্রইং রুমে বসতে দেয়া হয়েছে, রুমটার তিন দিকে তিনটা দরজা, প্রত্যেকটাতে ক্রিমকালারের পর্দা ঝুলছে, পর্দাগুলো যত না দামি তার থেকে গম্ভীর, রুমের অন্যান্য আসবাবের মতো। তবে রুমটাতে বসে থাকতে কেমন একটা স্বস্তি অনুভব হচ্ছে। এতবড় একটা রুম কিন্তু ফার্নিচারের গাদাগাদি নেই, তবে যা আছে তা কিছুটা পুরানো ধাঁচের হলেও বেশ রুচিশীল।
আমার সম্পর্কে একটু বলে নেই। আমি নিতান্তই সাধারণ একজন, প্রায় বেকার। প্রায় বেকার কারণ বি.কম. পাস করে একটা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মে কাজ করতাম, কোভিডের কারণে চাকরিটা নাই, তাই এখন পুরোনো ফার্নিচার বেচাকেনার কাজ করি। জাভেদ সাহেব এ লাইনে আমার বস, চাকুরির পাশাপাশি ওনার একটা পুরোনো ফার্নিচারের দোকান আছে আমাদের মহল্লায়, ওনাদের বাসার সামনে। প্রতিদিন বিকেলে কেবল শনিবার ছাড়া আমি সেখানে বসি। শনিবার আমার আলসেমির দিন, ওইদিন পারতো পক্ষে কোনো কাজ রাখি না। আজ শনিবার আমার বের হওয়ার কথা না, কেবল জাভেদ ভাইয়ের পীড়াপীড়িতে আজ বের হয়েছি। জাভেদ ভাই আমাকে এ বাড়িতে পাঠিয়েছেন একটা পালঙ্ক দেখার জন্য।
অনেকক্ষণ বসে আছি ভিতর থেকে এখনো কেউ আসছে না, কিন্তু এক জায়গায় এতক্ষণ সময় দিতে হলে তো চলবে না, একটু জোরে কেশে নিজের অস্তিত্ব জানান দেই। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আমার বা'দিকের পর্দাটা নড়ে উঠল। হুম ঠিকই দেখেছি, পর্দা ঠেলে হালকা বেগুনি রঙ এর শাড়ি পরা একজন বয়স্ক ভদ্র মহিলা ঢুকলেন তার পিছনে ছোট্ট একটা ট্রে হাতে একটা মেয়ে। মেয়েটি ট্রে টা আমার সামনে রাখল, সেখানে এককাপ চা, দুটো মিষ্টি আর এক গ্লাস পানি। ভদ্রমহিলা কে দেখে উঠে দাঁড়িয়ে সালাম দেই, উনি আমাকে বসতে বলে কারও নম্বরে ডায়াল করলেন। আমাকে ইশারায় খেতে বলে উনি কথা বলতে থাকেন। কথোপকথনে বুঝতে পারি উনি জাভেদ ভাই এর সঙ্গেই কথা বলছেন। মিষ্টি দেখে মনে হলো সকালে নাস্তা করিনি, এতক্ষণ ভুলে থাকা ক্ষুধাটা পেটে মোচড় দিলো, মিষ্টির প্লেটটা হাতে নিয়ে খেতে শুরু করি। ভদ্র মহিলা কথা শেষ করে আমার দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘পালঙ্কটি আমার মায়ের, আমি এতদিন ধরে রেখেছি এখন আর পারছি না। এ বাড়ির অন্য ফার্নিচারের সাথে বেমানান আর বেশ উঁচু আমার পক্ষে ওটা থেকে ওঠা নামা বেশ কঠিন, তবে বেশ ভালো কন্ডিশন ৷ কিন্তু জাভেদ তো দাম দিতে চাইছে না, তাও তুমি দেখ।
‘আমাকে সঙ্গে আসতে বলে আবার উনি যে দরজা দিয়ে বের হয়েছিলেন সেটার দিকে আগালেন, আমি অনুসরণ করি। লম্বা একটা করিডোর পেরিয়ে একটা বড়সড় বেডরুমে প্রবেশ করি। রুমে ঢুকতেই একটা চেনা গন্ধ নাকে লাগে, কিসের ঠিক বুঝতে পারছি না তবে গন্ধটা উপেক্ষা করা যাচ্ছে না। রুমের প্রায় অর্ধেকটা জুড়ে ঢাউস সাইজের একটা পালঙ্ক। পুরোনো দিনের পালঙ্ক আমি এর আগেও দেখেছি আমার নানা বাড়িতে কিন্তু এটা একেবারেই অন্যরকম। কারুকাজ করা পিতলের তৈরি বড় বড় পায়া, মাথা ও পায়ের দিকেও কাঠের ফ্রেমের উপরে পিতলের কারুকাজ, পিতলের রঙটাও বেশ ঝকঝকে বোঝা যাচ্ছে যত্ন-আত্তি বেশ করা হয় এটার। তবে ফ্লোর থেকে এটার উচ্চতা আমি যতটা ধারণা করেছিলাম ততটা নয়, পুরু মেট্রেসের ব্যবহারে অনেকটাই আধুনিক চেহারা। পাশেই একটা কাঠ আর পিতলের কারুকাজ করা জলচৌকি দেখে বুঝলাম পালঙ্কে ওঠার জন্য এটা ব্যবহার হয়। পুরোনো ফার্নিচার কিন্তু একটা রাজকীয় ভাব আছে, মুগ্ধ হই। পালঙ্কটা দেখার পর থেকেই মাথায় একটা গান ঘুরছে, ‘আমি স্বপ্নে দেখলাম মধু মালার মুখরে... স্বপ্ন যদি সত্য না হইত, তাহলে পালঙ্ক কেমনে বদল হইল... মা ধন’, পালঙ্কটাতে শুয়ে গলা ছেড়ে গানটা বড্ড গাইতে ইচ্ছে করছে এখন, কিন্তু ভদ্রমহিলার সামনে গুন গুন করে গান ধরাও কি সমীচীন হবে? ভাবতে ভাবতেই জাভেদ ভাইকে ফোন দেই, বলি,
—ভাই পালঙ্ক দেখলাম। কিন্তু এটাতে কাঠের থিকা পিতল বেশি। তাছাড়া এত পুরানা কাঠ দিয়া কি করবেন? মালটাতো আর যাদুঘরে দেবেন না, এইটা বেচা যাইব না।
ব্যবসায়িক কেনা বেচার ক্ষেত্রে এমন সব কথা বলতে হয়, এটা জাভেদ ভাই এর কাছ থেকে শেখা। কথা বলতে বলতে আড়চোখে মহিলার দিকে তাকাই, দেখি ওনার মুখটা কালো হয়ে গেল। ফোন ছেড়ে ওনাকে বলি,
—জাভেদ ভাই কয়েকটা ফটো তুলে নিয়ে যেতে বলেছেন, আপনার আপত্তি নাই তো?
—না তা কেন? কিন্তু তোমাকে দামের ব্যাপারে কি কিছু বলেছে?
—আট হাজার টাকা ফটো তুলতে তুলতেই উত্তর দেই
—না তাহলে তোমাদেরকে কেন দেবো? পাড়ার ভাঙ্গারির দোকানের ওরাও আট হাজার দেবে।নেহাৎ টাকাটা আমার প্রয়োজন নইলে এটা আমি ছাড়ি
—আপনি কত হইলে ছাড়বেন?
—আমি বিশ হাজারের নীচে দেব না
—এত দাম পাইবেন না …
মহিলার মুখের দিকে চোরা চোখে তাকাই, একটু আগের উজ্জল মুখটা এখন করুন মনে হয়। নিজের তোলা ছবিগুলো দেখতে গিয়ে পালঙ্কটার প্রতি কেমন টান অনুভব করি। ইস এটাতে যদি একদিন ঘুমাতে পারতাম! মনে মনে ভাবি নিজে কিনে ফেলব নাকি? কিন্তু টাকা! রুমির কাছে চাইলে কেমন হয়!
ওই বাসা থেকে বের হয়ে সোজা খালার বাসায় যাই। খালার রান্না ঘর থেকে চিংড়ি ভূনার মিষ্টি গন্ধ আসছে। খালাকে রুমির কথা জিজ্ঞেস করলে বলে
—ও গোসল করছে। তুই কিন্তু খেয়ে যাবি, আবার পট করে দৌড় দিস না।
ফুল স্পিডে ফ্যান চালিয়ে সোফায় বসে বসে পালঙ্ক' র ছবিগুলো দেখছিলাম, এমন সময় রুমি ঢুকল। রুমি সুগন্ধি সাবানের ভুরভুরে ঘ্রাণে মাত্র ডুব মেরে এসেছে যেন, এ গন্ধটাও আমার চেনা, কপাল কুঁচকে মনে করার চেষ্টা করি। হয়তো গুনগুন করে মধুমালার গানটাও গাই। রুমি ধমকে খেয়াল হয়,
—কিরে অমন করে তাকিয়ে আছিস কেন? আবার গানও গাচ্ছিস! কি প্রেমে ট্রেমে পড়ছিস নাকি? রুমিকে পাশে বসিয়ে পালঙ্কটা দেখাই। রুমির চোখে মুগ্ধতা খেয়াল করি। বলি,
—আমাকে কিছু টাকা ধার দে, পালঙ্কটা কিনব
—কি করবি বেঁচবি? এই পালঙ্ক কেনার মত সৌখিন মানুষ কম
—বেঁচব না রেখে দিব
মহিলার মুখটা মনে পড়ে ,কিন্তু রুমি কে বলি না। রুমি স্থির দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। বলে,
—ঠিক কি কারণে তুই পালঙ্কটা কিনতে চাইছিস জানিস তো? তুই আসলে ঐ মহিলাকে হেল্প করতে চাইছিস। কিন্তু তোর কাজ কেনা বেচা করা, ইমোশনালি আ্যাটাচড হওয়া না। তুই বড় জোড় তোর ওই জাভেদ ভাইকে বাদ দিয়ে ওনার জন্য অন্য একজন ক্রেতা ধরে দিতে পারিস। এসব কেনা টেনা মাথা থেকে নামা।
রুমির কথায় হতাশ হই।
রাতে ঘুমানোর আগে জাভেদ ভাই কে ছবিগুলো পাঠাই। জাভেদ ভাইকে নিজের ইচ্ছাটার কথা আর বলি না। মাঝরাতে স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে যায়। না নিজেকে নিয়ে মদন কুমারের স্বপ্ন নয়, দেখি ভাঙ্গারির দোকানে দুটো ছেলে পালঙ্কটিকে ভেঙে ফেলছে, তাদের একজন আমি অন্যজন জাভেদ ভাই। মাথার মধ্যে পিতলের ফ্রেমে আঘাত করার তীব্র আওয়াজ। জাভেদ ভাই হাঁপাচ্ছে আর হাতুরির আঘাত করছে, ফাঁকে ফাঁকে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে; কিন্তু একি! জাভেদ ভাইয়ের দাঁতগুলো পিতলের মত সোনালি, ঝক ঝক করছে। আমার চোখ ঝলসে যায়, তাকাতে পারি না। ধরফর করে বিছানায় উঠে বসি, কিন্তু শব্দটা এখনো শোনা যাচ্ছে। স্বপ্নের ঘোরে থম মেরে বসে থাকি খানিকক্ষণ। শব্দ'র উৎসটা পরিষ্কার হয়। আমাদের বাসার দুইটা প্লট পরে একটা কন্সট্রাকশনের কাজ চলছে, আজকাল দিন রাত চব্বিশ ঘণ্টাই এসব কাজ চলে, শব্দটা সেখান থেকেই আসছে। বিছানা থেকে নেমে পানি খাই, আবার ফিরে আসি। ম্যাসেঞ্জার চেক করি জাভেদ ভাই পালঙ্কটি কেনার ব্যাপারে কোনো উৎসাহ দেখিয়েছে কিনা। না এখনো কোনো মেসেজ নাই। সকালে ফোন করে জিজ্ঞেস করতে হবে, উনি কিনতে না চাইলে অন্য ব্যবস্থা কি নেয়া যায়, ভাবতে থাকি। মাথায় আবার মধুমালা—মদন কুমারের গানটা ফিরে আসে কিন্তু ঘুম আসে না, তারপর আর ঘুমুতে পারি না।
সায়মা আরজু, অধ্যাপক ও কথাসাহিত্যিক, বাংলাদেশ