গুচ্ছ কবিতা ।। বেবী সাউ
পরিব্রাজিকা
তুমিও সহজ মতো বিশ্বাস করেছ সবকিছু।
সত্য ভেবে এ সংসার। ভাঙা চাল। ভাতের কাঁকর
নীরবে না-পাওয়া নিয়ে আমিও জপেছি রাধানাম
ঝড় এলে উড়ে যায় চাল, শস্য, তাও বলি—‘তিষ্ঠ ক্ষণকাল’
যেভাবে বানের জলে ভাসে কৃষিকাজ
কৃষকের মন ভাবে প্লাবিত এ মাটি
অধিক ফলন সুখে
বর্ষশেষে ভেজা নারী
কোথা থেকে কোথায় বা যায়!
রাজনীতি
সমস্ত সুপারি বন চাঁদের আলোয় হেঁটে যায়
ইতিউতি শেয়ালের চোখ, গন্ধ শুঁকে শুঁকে আসে
পা-ছাপে সিঁদুর দাগ, খানা-খন্দ, ডহরি জঙ্গল
অপেক্ষা করুণ হলে, পাড়াপ্রতিবেশী সব বোঝে
কবেকার আলপনা! কতটা পিঁপড়ে জমছে এই
শাকে ভাতে
লগ্ন
দিতে তো পারিনি কিছু। শুধু বলে গেছি ‘থেকে যাও’
এই গৃহকোণ, ছাদ, অভিসারপথ শূন্য ভেবে
তুমিও নির্মম।
ভাঙো জমে থাকা বিস্মৃতি অতল
লাজরক্ত ঢেলে দিয়ে
সমস্ত নির্দেশ ভেঙে একা হেঁটে যাও বিবাহ উৎসবে
লক্ষ্মী
প্রকৃত কুশল জানো।
বিনিময়ে খসে যায় পাকা ধান
ফেরাটা সহজ ভেবে
তুমিও সাধক যেন
অভিমানে
পথে পথে ফেলে যাওয়া কৃষিক্ষেত হেমন্তেরবন সেই
আজন্ম পোড়ানো শখে সেদিনের
ডাকনামে ভরেছ পরান?
প্রার্থনা
এই শেয়ালের বন
কে কখন টেনে নিয়ে যাবে একা নিশিডাক
সাদাদেহে তুমিও ঈশ্বর
আচমন, ছড়ানো ছেটানো জল
পিছলে গেছি তো কতবার
মুখে লেগে আছে ভাঙা চাঁদ কলঙ্ক বলয়
হুইসিল বেজে গেছে কোজাগরী রাতে
বিভ্রম শেখাবে জেনে বঁধুয়া হে
করতল পেতে আছি অছিলায়
ম্যাজিক
শতাব্দী প্রাচীন বেদি, দৃশ্য হেঁটে গেছে দৃশ্যান্তরে
ঝলমলে জামা গায়ে তুমিও নিবিড়
অভাবের
বলে যাচ্ছ হাওয়া জল বদলের কথা
উদাসীন
বিনীত গমের ছায়া। মুহূর্তের অসামান্য দাগ
মধ্যবিত্ত ধানক্ষেত
আলপথ ভেবে নিজেকে বাঁকায়
নির্মম হে! তাকে সহ্য শেখানোর ছলে
গায়েব করেছ