লি পো’র কবিতা

(চাইনিজ কবি লি বাই (Li Bai), লি বো (Li Bo), লি পো কিংবা লি তাইবাই (Li Taibai)-এর জন্ম ৭০১ খ্রিস্টাব্দে এবং মৃত্যু ৭৬২তে। তিনি নিজের সমকাল থেকে আজ পর্যন্ত স্বীকৃত হয়েছেন একজন প্রতিভাধর এবং রোমান্টিক ব্যক্তিত্ব রূপে, যিনি ঐতিহ্যগত কাব্যরূপ বা ফর্মকে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করেছেন। লি পো এবং তাঁর বন্ধু তু ফু (Tu Fu) ওরফে দু ফু (Du Fu), যাঁর জীবনকাল ৭১২-৭৭০ সাল, দুজনেই ট্যাঙ সাম্রাজ্যে (Tang Dynasty) চিনা কবিতার বিকাশের জন্যে সবচেয়ে প্রণিধানযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। এই সময়কালকে চিনা কবিতার স্বর্ণযুগ বলা হয়ে থাকে। সেকালের ৩ বিস্ময় বলতে বুঝায়--লি পোর কবিতা, পেই মিনর তলোয়ার খেলা আর ঝাঙ জু’র ক্যালিগ্রাফি।)


শরতে নদীর গান

সবুজ পানিতে ভাসে চকচকে চাঁদ
শুভ্র সারসেরা উড়ছে জোছনায়

যুবক শুনতে পায়, তরুণী কুড়ায় পানিফল:

রাতের আঁধারে, গান গাইতে গাইতে, তারা
একসাথে বাড়তি পথ ধরে


একা পর্বতের দিকে তাকিয়ে

সব কয়টা পক্ষী উইড়া গেছে চলে
একখান একলা মেঘ হেইলা-দুইলা ভাসে
কখনো ক্লান্ত হই না আমরা পরস্পর চাইয়া থাকতে-
খালি পর্বতটা আর আমি


তু-ফু সম্পর্কে

তু-ফু’র সাথে আমার দেখা এক পর্বত চূড়ায়
আগস্টের সূর্য তখন গরম

তার বিশাল খড়ের টুপির ছায়ায়
তার মুখখান আছিল বিষণ্ন

আগের বছরগুলাতে যখন আমরা মিলেছিলাম
তার থেইকা সে হইছে আরও ফ্যাকাসে, অবসন্ন

অসহায় বুড়া তু-ফু, তখন আমি ভাবছিলাম
সে আবার পীড়াদায়ি কবিতার যন্ত্রণায় ভুগছে


স্নাত এবং ধৌত

সুরভিতে গোসল করা
তোমার টুপিতে ব্রাশ কইরো না
সুগন্ধিতে ধোয়া
তোমার কোট ঝাইরো না

“দুনিয়াটা জাইনা
ভয় কতো বেশি বিশুদ্ধ
সর্বজ্ঞানী লোকে
মূল্য দেয় আর জমায়ে রাখে আলো”

নীল পানির ধারে
এক বুড়া বড়শিঅলা মাছশিকারী বসা:
তুমি আর আমি একসাথে
চল বাড়ি যাই


একা একা পান করা

আমার মদ বাইর কইরা আনি ফুলের ভেতর থেকে
একা পান করার জন্যে, বন্ধুরা ছাড়াই।

গেলাসটারে উপরে তুলি চাঁদকে লোভ দেখাইতে।
সে আর আমার ছায়া মিলায়ে আমরা তিনজন হই।

কিন্তু চাঁদ মদ্য খায় না,
আর আমার ছায়াও তারে অনুসরণ করে।

আমি বেড়াইব চাঁদ আর ছায়ার লগে, সুখে
বসন্তের শেষদিন যাবৎ।

আমি যখন গান গাই, চাঁদ নাচতে থাকে।
আমি নাচলে আমার ছায়াও নাচে।

আমরা জীবনের আনন্দ ভাগ করে লই,
যখন শান্ত হই।
মদ্যপ, প্রত্যেকেই চলে আলাদা রাস্তায়।

চিরস্থায়ী বন্ধুরা, যদিও আমরা ঘুরে বেড়াই
আমরা আবার মিলবো মিল্কি-পথে

menu
menu