দুটি কবিতা ।। বিবিকা দেব

এসো বর্ষা

বর্ষা তোমাকে ছুঁয়ে দেখিনি কত দিন। জানালার ধারে দাঁড়িয়ে, স্মৃতি রোমাঞ্চে ফিকে হাসি ঠোঁটের কোণে। কেন জান? তোমার শীতল রস করতে আস্বাদন। জন্মান্তরে এত কাছে থেকে ছুঁয়েছি প্রতি মুর্হূতে। মনে আছে তোমার, সেই যৌবনে উপচেপড়া বর্ষণ। আমার মাথায় ঝাঁকড়া চুল অবধি ভিজিয়ে ছিলে। কড়া রোদে যখন একটু একটু চুল বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ে, তখন শিহরণ শিরা উপশিরায়।

গরম নিঃশ্বাসের প্রভাবে কেঁপে ওঠে ইন্দ্রিয়ের সূক্ষ্ম অনুভূতি। বৃষ্টি আরো একবার এসো হরিণীর ন্যায়, চঞ্চল হয়ে ভিজিয়ে দাও সমস্ত প্রকৃতির উদ্যান। রিনিঝিনি কিশোরীর হাতের কঙ্কণে। শব্দ তরঙ্গে বেহালার আত্মজীবনীতে। ভিজিয়ে দাও মাটির সোঁদা গন্ধে আঁতুড়ের শৈশবে। এখনো বর্ষা এলে মনের ভেতর জলের চঞ্চলতা ভেজায় আমাকে। 

প্রকৃতির কার্নিশে

ছাদের কার্নিশে মৌন বিকেলটা ঝুলে আছে। জীবনের বিকেলে হেলে পড়া শিরীষ বৃক্ষটা ফুলে ফুলে ভরেছে। মেঘেদের ক্লান্তহীন ছুটে চলা থমকে গিয়ে রিমঝিম বৃষ্টির ঝরে পড়া। কিছুদিন যাবত ফলবতী জাম গাছের শাখায় ডিমে তা দিচ্ছে মা কাক। দেখে নিচ্ছে বুলবুলিটা জামের গায়ে কালো রঙ।

পরিত্যক্ত পুকুরে ফেনা ভরা বুকে ডাহুকের অভিরাম খোঁজার যাপন। ক্ষুদে মীন ডুব সাঁতারে মুচকি হাসে। আকাশের কোণায় দাঁড়িয়ে থাকা সূর্যটার সাথে। বৃক্ষের ঝরে পড়া শুকানো পাতারা ফেনার সঙ্গী হয়ে নিজেদের ভাসিয়ে দেয় আপন আলিঙ্গনে। সূর্যটাকে বসিয়ে রেখে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে আরও মৌনতায়।


 • কবি, বাংলাদেশ। 

menu
menu