আবার জমবে মেলা

আবার জমবে মেলা
লালন নূর

হাত ধরে আর যাচ্ছে না থাকা হাত ছেড়ে দূরে থাকো; দূরে দূরে তবু খুব কাছে থাকি, দূরে দূরে যেন
সাঁকো। সব চুপ-চাপ, মহা সুনসান চোখগুলো উন্মুখ; কিছু খোলা নাই, শুধু খোলা আছে মর্গের লোভী মুখ।
কোথা উপশম নাই জানা নাই, কোনো আলো নাই চাঁদে; প্রকৃতির মহা প্রতিশোধ নাচে পৃথিবীর খোলা
ছাদে। বায়ুপথে বাজে মহা সাইরেন ডানা ফেলে গেছে পাখি, দিকে দিকে ভাসে মৃত্যুর হাসি শোকে শোকে
মাখামাখি। নাই ঢং-ঢং, আজানের ধ্বনি, নাই শঙ্খের ডাক; বাজে সাইরেন, বাজে হাহাকার, প্রকৃতির
মহাশাঁখ। ঝরে পরা ফুল মাটি ছুঁয়ে দেখে মাটির ঠিকানা নাই, এক ঠিকানায় সবাই শামিল সকলের বোন-ভাই।

কাছাকাছি থেকে এত দূরে তবু রাত শেষে রাত নামে; নাই শুভাশুভ, শিরেসংক্রান্তি—মানুষের ডাক নামে।
জলে ও কাজলে চোখে চোখে তারা আর জোনাকিরা জ্বলে; নাই উৎসব, মুখরতা নাই শিশুদের কোলাহলে।
দিকে দিকে শুধু কেঁদে কেঁটে মরে ফোটানো ফুলের বায়না, তাই দেখে ভেঙে কেঁপে কেঁপে ওঠে ক্বলবে
বসানো আয়না।

সব ভাঙনের শেষ হবে দেখো শুরু হবে শুভদিন; মানুষই জানি শোধ করে দেবে প্রকৃতির মহা ঋণ। বামনের
হাতে ধরা পরে যাবে দূরে বসে থাকা চাঁদ; মানুষের জয়ে জানি খুলে যাবে মাথার উপরে ছাদ। একই ছাদের
ছায়াতলে ফের বসবে রঙের খেলা; ঝরা ফুলগুলো শুধু মুছে যাবে, আবার জমবে মেলা। ঝরে পরা ফুল মাটি
ছুঁয়ে থাকো, কারণে ও অকারণে; ডালে ডালে তুমি ফুটবেই জানি জীবনের প্রয়োজনে।

ক্লিভল্যান্ড, ওহাইও, যুক্তরাষ্ট্র

menu
menu