একই এক ভয়ার্ত অনুভবের সমান অংশীদার
একই এক ভয়ার্ত অনুভবের সমান অংশীদার
কাজী আতীক
সময়কে থমকে যেতে দেখেছি আগেও বহুবার, হয়তো স্বরূপ ভিন্ন তার,
যেমন বিরূপ থমকে ছিল সময় একাত্তরে বাংলায়
যেমন বিপর্যস্ত থমকে যাওয়া সময় পশ্চিম তীর গাজায়
ঠিক তেমনি তিব্বতে কাশ্মীরে রাখাইনে ইরাকে ইয়েমেনে সিরিয়ায়
ভয়ংকর থমকে যাওয়া সময় ছিল ভিয়েতনামে, ছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়,
সময়ে সময়ে আরো বহু জাতিগোষ্ঠীর থমকে ছিল সময়, তীব্র কষ্টকাল,
আরোপিত অবরোধে অসহনীয়—অমানবিক কদাকার,
যা কেবল নিপীড়নের কৌশলে কোণঠাসা করা এক ভয়ানক অদৃশ্য দেয়াল।
এখনো আমরা আবার এক কিম্ভূত থমকে যাওয়া সময়ে—
তবে এবার আর খণ্ডিত নয়, গোটা বিশ্ব এখন একই এক ভয়াবহ সংকটে,
এবার আর জাতি গোষ্ঠী ভেদাভেদ নেই কোনো, অভেদ ও নিরঙ্কুশ
এবার কেবল কিছু মানুষের জন্যও নয়, সভ্যতা জুড়েই একই এক আতঙ্ক,
নিজেদের বাঁচাতে তাই মানববিশ্ব এখন এক কাতারে দাঁড়িয়ে সবাই,
আর তাই—নিজেরা নিজেদের দ্বারা আরোপিত এক ভিন্ন অবরোধে,
কেননা এক অদৃশ্য দানবের শাসনে গোটা পৃথিবী এখন প্রকম্পিত ভয়ে।
যারা কাছে থেকে বিপদ দেখেনি কখনো, বোঝেনি কষ্টেসৃষ্টে বাঁচার দখল
কস্মিনকালেও যারা ভোগ করেনি কখনো অবরোধ যাপনের যন্ত্রণা কোনো,
তারাতো প্রত্যক্ষ করেনি আগে কখনো সত্যিকার সংকটের স্বরূপ, যেমন
এখোন, প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর চোখ রাঙানো ভয়াবহ এক থমকে যাওয়া সময়।
এখন যখন প্রকৃতির রোষ সমান অসহায় বিশ্ব, বোধোদয় হবে কি সবার?
যেমন এই সময়ের পৃথিবীটা—একই এক ভয়ার্ত অনুভবের সমান অংশীদার।
১১ এপ্রিল ২০২০, নিউইয়র্ক।