ঘুংঘুর প্রসঙ্গ এবং লেখা জমা দেয়ার নিয়ম

ঘুংঘুর প্রসঙ্গ

ঘুংঘুর বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার একটি ক্ষয়ে যাওয়া নদীর নাম। 

এই নদীর নামেই আমাদের কাগজের নাম। নামের বানানটি ঘুংঘুর, নদীর নামটি ওইভাবেই নথিতে উল্লেখিত।

ঘুংঘুর শিল্প সাহিত্য বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক ছোটকাগজ, দেশে ও বিদেশে বহুল পঠিত এবং সমাদৃত। বছরে তিনটি নিয়মিত সংখ্যা বের হয়— ঢাকা থেকে একুশে বইমেলা সংখ্যা, নিউইয়র্ক থেকে নিউইয়র্ক বইমেলা সংখ্যা এবং কলকাতা থেকে কলকাতা বইমেলা সংখ্যা। চতুর্থ অনিয়মিত সংখ্যাটি ঘুরে ঘুরে আসে পৃথিবীর বিভিন্ন বাঙালি অধ্যুষিত শহর থেকে। 

ঘুংঘুর-এর সঙ্গে জড়িত সবাই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করেন, মূলত সাহিত্যকে ভালোবেসেই এই কাজ। আমরা পৃথিবীর নানা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছি, তাই নেটের মাধ্যমেই কাজগুলো সারতে হয়। আমাদের কলকাতা সংখ্যাটি কলকাতা থেকেই ছাপা হয়, বাকি সব সংখ্যার কাজ ঢাকা থেকে সম্পন্ন করা হয়। প্রথম সংখ্যা থেকেই লেখকসূচিতে ঘুংঘুর-এর একটা আন্তর্জাতিক চরিত্র স্পষ্ট। প্রকাশিত লেখার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বাংলাদেশের বাইরে থেকে আসে, ধীরে ধীরে এই সংখ্যা আরও বাড়ছে।

বাছাইপর্বের জন্য প্রতি সংখ্যায় দুই বা তিনজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়, তাঁরা লেখাগুলোকে প্রাথমিকভাবে মূল্যায়ন করে মন্তব্যসহ সম্পাদক কিংবা অতিথি সম্পাদকের কাছে পাঠান। ঘুংঘুর-এর একুশে সংখ্যা ছাড়া আর প্রতিটি সংখ্যার জন্যই একজন অতিথি সম্পাদক থাকেন, যিনি প্রাথমিক বাছাইকারীদের মন্তব্যগুলো পর্যালোচনা করেন এবং সেই সঙ্গে তাঁর নিজস্ব সম্পাদকীয় মন্তব্য সংযোজন করেন। এর পরে এটি সম্পাদকের কাছে আসে চূড়ান্ত মনোনয়নের জন্য। এইভাবেই যৌথ বাছাইকর্মটি সমাপ্ত হয়।

আমরা প্রতি সংখ্যায় অন্তত একজন নবীন লেখকের লেখা প্রকাশ করি, যার লেখা আগে কোথাও প্রকাশ হয়নি। প্রবাসের সংখ্যাগুলোতে অভিবাসী লেখকদের সামান্য অগ্রাধিকার দেয়া হয়। এছাড়াও বড় শহরে বসবাসরত প্রতিষ্ঠিত লেখকদের পাশাপাশি মফস্বলের অপেক্ষাকৃত স্বল্প পরিচিত লেখকরাও যেন যথাযথ স্থান পান সে বিষয়টার প্রতি খেয়াল রাখা হয়। এই বিষয়গুলো ঘুংঘুর-এর ঘোষিত নীতিমালার সমান্তরাল। আমরা চাই নবীন লেখকরা আরও লেখায় উৎসাহী হোন, সাহিত্যে সম্পৃক্ত হোন। আমরা চাই প্রবাসের বৈরী পরিবেশে থেকেও যারা সাহিত্যচর্চা করছেন তাঁরা এই অভ্যাসটি চালু রাখুন, বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখুন। আমরা বড় শহরের বাইরের সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিক অঞ্চলের সাহিত্যচর্চাকে উৎসাহিত করতে চাই, এজন্য মফস্বলের মানসম্পন্ন সাহিত্যকর্মের প্রতিও আমাদের বিশেষ আকর্ষণ থাকে।

এখন পর্যন্ত অনুসারিত নিয়ম অনুযায়ী ঘুংঘুর-এর ছাপা সংখ্যাগুলোতে সম্পাদক এবং অতিথি সম্পাদকের নিজেদের লেখা প্রকাশ করা হয় না। (সম্পাদকীয় কিংবা উপসম্পাদকীয় ব্যতীত)। বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া (এ পর্যন্ত তেমন কারণ ঘটেনি) পরপর দুই সংখ্যায় একই লেখকের লেখা নির্বাচন করা হয় না। অন্যদের জায়গা করে দেয়ার জন্যই এই নিয়ম। 

আমরা লেখার সাহিত্যমান এবং লেখকের মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, তাই আমাদের কাগজে নানা মতের লেখা প্রকাশিত হয়ে আসছে। ঘুংঘুর-এ প্রকাশিত লেখার বিষয়বস্তু সম্পর্কিত দায়-দায়িত্ব লেখকের নিজের, মতামতের জন্য সম্পাদক কিংবা সম্পাদনা পরিষদের সদস্যগণ দায়ী নন।

লেখা জমা দেয়ার নিয়ম

শুধুমাত্র অপ্রকাশিত মৌলিক লেখাই গ্রহণ করা হবে। 

অন্য কোনো প্রিন্ট কিংবা ইলেকট্রনিক সাহিত্যপত্রে প্রকাশিত লেখা বিবেচনার অযোগ্য। ফেসবুকে প্রকাশিত লেখা গ্রহণযোগ্য, তবে এক্ষেত্রে লেখককে সততার সঙ্গে এই তথ্যটি লেখা পাঠানোর সময়ই উল্লেখ করে দিতে হবে।

শুধুমাত্র ইমেইলে পাঠানো টাইপ করা লেখা গ্রহণ করা হয়। দয়া করে SutonnyOMJ, Avro অথবা অন্য কোনো ইউনিকোড সমর্থনকারী ফন্ট ব্যবহার করবেন। ওয়ার্ড ফাইলের সঙ্গে একটি পিডিএফ ফাইল পাঠালে আমাদের সম্পাদনার কাজে সুবিধা হয়।

ঘুংঘুর-এর প্রতিটি সংখ্যার জন্য লেখা জমা দেয়ার সময়সূচি নির্দিষ্ট করে লেখা আহ্বান করা হয়। এই সময়সূচির বাইরে ছাপা সংখ্যার জন্য কোনো লেখা গ্রহণ করা হয় না, প্রাপ্তি স্বীকারও সম্ভব হয় না। 

এই নিয়মাবলি কেবল ছাপা সংখ্যার জন্যই প্রযোজ্য। কারণ ঘুংঘুর-এর ওয়েব সংস্করণে ক্রমাগতভাবে লেখা গ্রহণ করা হয় এবং মনোনীত লেখা প্রকাশ করা হয়। 

ঘুংঘুর-এর বিজ্ঞপ্তি শুধুমাত্র ফেসবুকেই দেয়া হয়। ঘুংঘুর-এর ফেসবুক পেজ এবং সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের ব্যক্তিগত টাইমলাইনে লেখা আহ্বান সম্পর্কিত এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়, সাধারণত মাত্র একবার। তাই ঘুংঘুর অনুরাগী বন্ধুদের আমাদের ফেসবুক পাতার সদস্য হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। (পাতার নাম ঘুংঘুর, বাংলায় টাইপ করবেন)। 

লেখা আহ্বান করে দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা সবকটি ঠিকানায় লেখা পাঠাতে হবে। সম্পাদকীয় পরিষদের সদস্যগণ নানা দেশে ছড়িয়ে আছেন, এজন্যই এই অনুরোধ। দয়া করে লেখকের ডাক ঠিকানা, টেলিফোন, ইমেইল ও ফেসবুক আইডি সংযুক্ত করবেন। ঠিকানাবিহীন লেখা মনোনয়নের জন্য বিবেচিত হয় না। 

লেখার প্রাপ্তি স্বীকার করা হয় আমাদের ঢাকা অফিস থেকে। বাছাই শেষে মনোনীত লেখার ব্যাপারেও যোগাযোগ করা হয়। লেখা জমা দেয়ার পর ইনবক্সে খোঁজ নেয়ার প্রয়োজন নেই। চূড়ান্ত লেখক তালিকা ফেসবুক পেইজে সূচিসহ প্রকাশ করা হয়।

একই লেখকের লেখা পরপর দুই সংখ্যায় প্রকাশ করা হয় না।

যাদের লেখা আগে কখনো কোথাও ছাপা হয়নি, প্রতি সংখ্যায় তেমন এক বা একাধিক নবীন লেখকের লেখা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ছাপার নিয়ম আছে। জমা দেয়ার সময় এ তথ্যটা উল্লেখ করা সংগত, কারণ এটি বাছাইকর্মের জন্য প্রয়োজনীয়।  

ঘুংঘুর-এর লেখকগণ ছড়িয়ে আছেন বিশ্বময়, তাই দেশের বাইরে অন্যান্যদের কাছে ছাপা কপি পাঠানো সম্ভব হয় না। তবে সকল সম্মানিত লেখকদের কাছে প্রকাশিত সংখ্যাটির ইলেকট্রনিক কপি পাঠানো হয়। 

ঘুংঘুর একটি বিজ্ঞাপন-অনির্ভর, অলাভজনক ছোটকাগজ, যার কার্যক্রম সহযোগীদের সহৃদয় অনুদানের ভিত্তিতেই চলছে। একারণেই অত্যন্ত সংকোচের সঙ্গে জানাতে হচ্ছে যে আপাতত ঘুংঘুর-এ প্রকাশিত লেখার জন্য কোনো সম্মানীর ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি।

ঘুংঘুর সম্পাদনা পর্ষদ এবং কর্মীদলের পক্ষ থেকে আমাদের পাঠক, লেখক, পৃষ্ঠপোষক ও অনুরাগীদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।

menu
menu