জুয়াড়ি

জুয়াড়ি
তোমার চোখের সাদাকালোয় পূর্ণ ওই চতুষ্কে
আকর্ষলিপিতে লিপিবদ্ধ রয়েছে চুম্বকের ইতিবৃত্ত—
আদ্যন্ত বৃত্তান্ত।
চোখের চাতুর্য চাহনিতে চৌম্বকবলের চক্রব্যূহ গড়েছ তুমি—আমার চতুর্দিকে,
তুমি নিজেই অবাচী-উদীচী মেরু সম্বলিত চুম্বক এক—
তোমার ঊনপাঁজুরে উত্তরী—তোমার উত্তর পৃথিবীর দক্ষিণে।
পৃথিবীর উত্তরে তোমার দৈন্যের দাক্ষিণ্য—তোমার দক্ষিণ।
এভাবেই তুমি এক উলটপুরাণ—
অয়স্কান্ত মণি—জোয়ারকে জুয়ায় উড়িয়ে তুমি ভাটার তীব্র টান।
তোমার পরশে লৌহে পরিণত হয় পরশপাথর
—পুষ্পরাগ প্রত্নহৃদয়।
পিনাকধনুক ওই ভ্রূযুগল মধ্য হতে
তোমার কটাক্ষবাণে আছড়ে পড়ে চৌর্যবৃত্তীয় আকর্ষণ।
চুম্বকের চোরাজাল প্রয়োগে তুমি হরণ করো জন, বল—বহর—বুদ্ধি,
এগোবার পথ নেই—পেছনের ছক, সেও শেষ—চারপাশ রুদ্ধ।
চক্রব্যূহ মাঝে আঁটকে পড়ে
রাজমুকুটে সজ্জিত মনটা কোণঠাসা ভীষণ যখন,
চোখের চতুষ্ক থেকে সব শেষে তুমি
চাঞ্চল্যে পূর্ণ বিচক্ষণ অস্ত্রটা এগিয়ে দাও আড়াই ঘর চালে।
এভাবেই বাজিমাৎ।
পরাজয়ের মধ্যে দিয়েও সবচেয়ে অর্থপূর্ণ জয় যে
পাওয়া যায়, প্রিয়,
জানো না কি সেই কথা তুমি?
তোমার চোখের চতুষ্কে—চুম্বকে আটকে পড়েছি পরাজিত আমি।
যেদিকে তাকাও, আমি ছাড়া দেখো কি কিছু আর?
আমি ছাড়া আর কিচ্ছু দেখো না তুমি।
তোমার দৃষ্টি আজ আমিময়।
বাজিমাৎ, প্রিয়তম।
ইশিতা জেরীন কবি, কথাসাহিত্যিক। ২০১৭ সালের অমর একুশে বইমেলায় নিঃস্বর নীলকণ্ঠ উপন্যাস প্রকাশের মাধ্যমে তিনি সাহিত্যসমাজে একজন লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এখন পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা আট। তিনি ঢাকায় বসবাস করেন।